23 Nov 2024, 08:26 pm

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তুলা উৎপাদন ৫ গুণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নতুন জাত প্রবর্তন ও চাষ এলাকা সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে তুলা উৎপাদন পাঁচগুণ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে তুলার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোক্তা।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের (সিডিবি) অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. ফখরে আলম ইবনে তাবিব বাসসকে বলেন, ‘তুলা একটি অর্থকরী ফসল। বস্ত্র শিল্পে তুলার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমাদের প্রতি বছর ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করতে হচ্ছে।’
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে বর্তমানে ৮.৫ মিলিয়ন বেল তুলার বার্ষিক চাহিদার বিপরীতে বছরে ০.২ মিলিয়ন তুলা বেল (১ বেল প্রায় ৪৮০ পাউন্ডের সমান) কম উৎপাদন করে।
অধিক চাহিদার প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশী টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিল এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীরা ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আফ্রিকান ও মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল এবং পাকিস্তান থেকে তুলা আমদানি করে।
তাবিব বলেন, নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাত ব্যবহার করে এবং কয়েকটি সমতল এলাকার কয়েকটি জেলার পাশাপাশি দেশের দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের বিস্তীর্ণ কম উর্বর জমি ব্যবহার করে দেশীয় তুলা উৎপাদন ১০ লাখ বেলে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলে ঝিনাইদহ ও যশোর জেলা সমতল এবং বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির কিছু অংশ হল পার্বত্য জেলা যেখানে দেশে বর্তমানে তুলা উৎপাদন করা হচ্ছে।
তুলা বোর্ড এখন তাদের উদ্যোগের অংশ হিসাবে খাগড়াছড়িকে অন্তর্ভুক্ত করে বৃহত্তর যশোর, বৃহত্তর কুষ্টিয়া, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং তিনটি পার্বত্য জেলাকে নিয়ে ১৩টি জোনে ২৭টি খামার ভিত্তিক পরীক্ষামূলত চাষাবাদ পরিচালনা করছে।
সিডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তুলার তুর্কি জাত উন্নয়নে সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক একটি প্রকল্পের অধীনে ১২টি উচ্চ ফলনশীল তুর্কি তুলার জাতের জার্মপ্লাজমের পরীক্ষা এখন গবেষণা খামারগুলিতে চলছে।
তাবিব বলেন, “এই উদ্যোগটি প্রধান ফসল উৎপাদনের ওপর যাতে প্রভাব না ফেলে এই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা বরেন্দ্র ভূমি (বৃহত্তর রাজশাহী), খরা ও লবণাক্ত প্রবণ এলাকা, নি¤œাঞ্চল এবং পাহাড়ি অঞ্চলের কম উর্বর অঞ্চলে তুলা চাষের আওতা সম্প্রসারণ করছি।”
তিনি বলেন, গত বছর সিডিবি বিজ্ঞানীরা দেশের পাঁচটি তুলা গবেষণা কেন্দ্রে একাধিক গবেষণা প্রকল্পের অধীনে দুটি চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবনের পাশাপাশি একটি নতুন তুলার জাত উদ্ভাবন করেছেন যার নাম “সিডিবি কটন ১৯”।
তালিব বলেন, “আমাদের গবেষণা জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি তুলার গুণাবলী উন্নত করেছে।”
তুলা প্রধানত জুলাই-আগস্ট সময়কালে বপন করা হয় এবং ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ফসল তোলা হয়। বর্তমানে তুলার চাষ বিস্তৃত রয়েছে ৪৫,০০০ হেক্টর এলাকায় যা ২০০৯-২০১০ সালে ছিল ৩১,৫০০ হেক্টর।
গত এক দশকে উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০০৯-২০১০ সালে তুলার উৎপাদন ১০০,০০০ বেলের কম ছিল।
সিডিবি কর্মকর্তার জানিয়েছেন, ২০০৯-১০ সালে কাঁচা বা বীজ তুলা উৎপাদন ছিল হেক্টর প্রতি প্রায় ২,০০০ কেজি যা এখন উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের প্রবর্তনের ফলে প্রতি হেক্টরে ৪,০০০ কেজিতে দাঁড়িয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তুলা উৎপাদন বাড়াতে ১৯৭২ সালে তুলা উন্নয়ন বোর্ড (সিপিডি) প্রতিষ্ঠা করেন।
সিপিডি বোর্ড গবেষণা পরিচালনা, বীজ উৎপাদন, বিতরণ ও বিপণন, তুলা চাষ সম্প্রসারণ এবং কৃষকদের মধ্যে ঋণ বিতরণে কাজ করছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 10326
  • Total Visits: 1281331
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২১শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৮:২৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018